১৯৯৮ সাল। আজ থেকে ১৯ বছর আগের কথা। তখন আমি ডায়েরি লিখতাম। প্রতিদিনের
ঘটনাগুলো প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করে রাখতাম। এখন আর
ডায়েরি লেখা হয় না। দীর্ঘদিন পর ব্যক্তিগত বুকসেলফ খুলতেই আমার প্রথম ডায়েরিটি
দেখতে পাই। ডায়েরিটি হাতে নিয়ে একের পর এক স্মৃতির পাতা উল্টাতে থাকি। হঠাৎ চোখ
পড়ে ১৮/১০/১৯৯৮ ইং তারিখের লেখাটির প্রতি। দুয়েক লাইন পড়তেই বুঝতে পারলাম এই দিনটি
আমাদের পরিবারের একটি শোকের দিন। এই দিনে আমার দাদা পান্ডব আলী মৃত্যুবরণ করেন।
আমির ইশতিয়াকের গল্প
নোটিশ:
নোটিশ: "এটা আমার ব্যক্তিগত ব্লগ। এই ব্লগ থেকে কেউ আমার অনুমতি ব্যতীত কোন গল্প অন্য কোথাও প্রকাশ করতে পারবেন না।"
বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৭
ছোট ভাই শফিউল্লাহকে মনে পড়ে
১৮ সেপ্টেম্বর
১৯৯৩ সাল। আজ থেকে ২৪ বছর আগের কথা। তখন আমার বয়স ১৩ বছর। এই দিনটি আমাদের
পরিবারের একটি শোকের দিন। এই দিনে আমার ছোট ভাই শফিউল্লাহ মাত্র ৬ বৎসর বয়সে
মৃত্যুবরণ করে। আমি তার মৃত্যুতে খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম। এখনকার মতো ২৪ বছর আগে
ডিজিটাল ছিলো না। তাই শফিউল্লাহর কোন ছবি তুলে রাখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তার ছবি
আমার মনের ফ্রেমে আজও ভেসে উঠে। মাত্র দুইদিনের অসুস্থতায় সে আমাদের ছেড়ে চলে
গেছে। এই দুইদিন ভাইটি কি পরিমাণ কষ্ট করেছে সেই স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না।
ছেলেবেলার ঈদ আনন্দ
আমার ছেলেবেলা একটি অভাবী পরিবারে কেটেছে।
পরিবারে অভাব থাকলেও ঈদের দিনে আনন্দের কোন কমতি ছিল না আমার মাঝে। আর সেই
ছেলেবেলাটা ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর থানাধীন ধরাভাঙ্গা গ্রামে কাটিয়েছি।
এখানেই আমার জন্ম; তাই ছেলেবেলার ঈদ কেটেছে
মা-মাটি ও প্রকৃতির সাথে, খেলার সাথীদের সাথে আনন্দ
ফূর্তি করে। রোযা শুরু হতেই কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে যেত ঈদের আর কত দিন বাকী আছে।
প্রতিদিন আঙ্গুলের কর গুণে গুণে হিসাব করতাম কত দিন পর ঈদ হবে। প্রথম ও শেষ রোযা
রাখতাম। মা বলতেন, শিশুরা ফেরেশতার মত নিষ্পাপ। এই দুটো
রোযা রাখলে সব রোযা রাখা হয়ে যাবে।
আমি এবং আমার বাবা
আমার বাবা
৮/১০টা বাবা থেকে আলাদা। একেবারেই আলাদা। বাবার মতো জনদরদী এমন মানুষ খুজে পাওয়া কষ্ট হবে। জন্মের পড় থেকেই যাকে আপন বলে জানতাম
তা হলো মায়ের পরে বাবা। বাবার আদর ভালোবাসায় আজ আমি
আজকের অবস্থানে আসতে পারছি। আমি আমার বাবার প্রথম
সন্তান। প্রথম সন্তান হিসেবে আমি অন্যান্য ভাই-বোনদের
থেকে আলাদা আদর পেতাম। জন্মের এক বছরের মাথায় আমি আমার বাবাকে যখন অধো অধো বুলিতে আব্বা…আব্বা…বলে ডাকতাম তখন থেকে আমি আমার বাবার
প্রিয় ছেলে হয়ে গেলাম। বাবা কোথাও গেলে আমি কেঁদে কেঁদে হয়রান হতাম। বাবাকে
একনজর দেখার জন্য আমি এদিক ওদিক ছুটাছুটি করতাম। আর
মা তখন আমার খুঁজে পেরেশান হয়ে যেত। বাবা বাজারে
গেলে তার পিছে পিছে যেতাম। আব্বু… বাজা…ম…জা, আনবেন আধো আধো ভাষায় বলতাম। বাবা আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন এবং সত্যি
সত্যি বাজার থেকে মজা নিয়ে আসতেন। তারপর ধীরে ধীরে
যতই বড় হতে লাগলাম ততই আমি বাবার কাছাকাছি চলে
আসলাম।
প্রথম বাবা হওয়ার আনন্দ
গত দীর্ঘ ৯ মাস
২ দিন আমার স্ত্রীর গর্ভের ভেতর বেড়ে উঠছিল একটি প্রাণের
অস্তিত্ব। যা আমাকে বাবা হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। আমি একটা নতুন জগতের সাথে পরিচিত
হচ্ছিলাম। দিন দিন আমি আমার স্ত্রীর পরিবর্তন কাছ থেকে লক্ষ্য করেছিলাম। যা আমাকে
একটি নতুন জগতের সাথে পরিচয় করে দিচ্ছিল। প্রতিদিন রাতে শুয়ে অনাগত সন্তানের
অপেক্ষায় দিন গুনতাম। আর ভাবতাম কেমন হবে আমার সন্তান। ছেলে না মেয়ে। ছেলে-মেয়ে
নিয়ে আমার কোন আক্ষেপ ছিল না। আল্লাহ যা দেন তাতে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম এবং অপেক্ষায়
ছিলাম একটি সুস্থ্য সবল সন্তানের আশায়। শত কষ্টের মাঝেও আমার স্ত্রীর চোখে-মুখে
আনন্দের উচ্ছ্বল ঢেউ দেখতাম। তার চেহারা দেখে আমার চোখে মুখে আনন্দের ঢেউ খেলে
যেত।
বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
প্রথম দেখা বইমেলা
দিনটি ছিল ২০০০ সালের ২১ শে
ফেব্রুয়ারি। শীত পেরিয়ে বসন্ত এসেছে। চারদিকে কোকিলের কুহুতানে মুখরিত হচ্ছে।
কিন্তু শীত এখনো পুরোপুরিভাবে বিদায় নেইনি। বাংলা একাডেমিতে তখন চলছে অমর একুশে বই
মেলা। টেলিভশেন শুনি, পত্রপত্রিকায়
দেখি লেখক-পাঠক-প্রকাশের মিলন মেলা বই মেলা। কিন্তু কোন দিন বই মেলায় যাওয়া হয়নি।
তাই অনেকদিন যাবত ভাবছি এবাবের বই মেলায় যাব। কিন্তু কিভাবে যাব? ঢাকা শহরের অলিগলি এখনও তেমন চিনি না। হাতে গুনা কয়েকবার ঢাকায় গেছি।
আর একা গিয়েওতো আনন্দ নেই।
মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭
ধান্দাবাজ
সকাল ছয়টা বাজে। আলাল সাহেব সবেমাত্র ফজরের নামাজ পড়ে বাসায় আসলেন।
সোফায় বসে চা খাচ্ছেন এমন সময় ওনার মোবাইলে রিং বেজে উঠলো। ফোনটি রিসিভ করতেই অপর
প্রান্ত থেকে একজন বললেন, আমি গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ার থেকে মুরাদ হাসান বলছি।
এত সকাল বেলা আলাল সাহেবের মোবাইলে কাস্টমার কেয়ার থেকে ফোন করায়
তিনি বিস্মিত হলেন। তা কি মনে করে এত সকাল বেলায় ফোন করছেন?
-
স্যার আপনি এই সিমটি দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করছেন তাই না?
নাকফুল
প্রতিদিন পাখির কিচিরমিচির ডাকে জোনাকীর ঘুম ভাঙে। ব্রাশ নিয়ে
টিউবওয়েলের কাছে যায়। দাঁত ব্রাশ করে হাতমুখ ধুয়ে আয়নার সামনে আসে। মুখে ক্রিম
দিতে আয়নায় চোখ রাখে। তারপর বের হয়ে পড়ে উঠান ঝাড়ু দিতে। বিয়ের পর থেকে সকালে উঠেই
আয়না দেখাটা প্রতিদিনের অভ্যাস হয়েছে ওর। আজও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আজ আয়নায় মুখ
পড়তেই চমকে উঠলো জোনাকী! আঙুলের আগায় আজ আর ক্রিম উঠেনা। নিজের মুখের প্রত্যেকটা
ভাঁজ ওর খুব চেনা। এইজন্যই বোধহয় এক পলকেই খালি নাকটা নজড়ে পড়লো। নাক স্পর্শ করে
স্তব্ধ হয়ে যায় সে। সোনার নাকফুলটা নাকে নেই!
বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৭
অভিমান
এই সবুজ!
আমি পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ঋতু দাঁড়িয়ে আছে। একটু অবাক হলাম! এ
মুহূর্তে ঋতুর এখানে আসার কথা না। কিন্তু কেন আসলো? আমিতো একা থাকতে
চেয়েছিলাম। আমিতো তার কাছ থেকে দূরে চলে আসছি। আমি বললাম, কি?
ঋতু বললো, তুমি আমাকে একা রেখে এখানে চলে আসলে কেন?
- কি করবো?
বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৭
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)