নোটিশ:

নোটিশ: "এটা আমার ব্যক্তিগত ব্লগ। এই ব্লগ থেকে কেউ আমার অনুমতি ব্যতীত কোন গল্প অন্য কোথাও প্রকাশ করতে পারবেন না।"

বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬

চোর


আজিজ ছোট এক কম্পিউটার ব্যবসায়ী। নরসিংদী সরকারি কলেজের পিছনে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কম্পিউটারের টাইপের কাজ করে। দিনে দুই তিনশত টাকার কাজ করে। এ থেকে দোকান খরচ বাদে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন মতে তার সংসার পরিচালনা করেন। তার সংসারে স্ত্রী, এক কন্যা ও এক ছেলে আছে। তাদেরকে নিয়ে সে ব্রাহ্মন্দীতে বাসা ভাড়া করে থাকে।

মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০১৬

দুষ্টু মিন্টু


আমি তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। তখন আমাদের ক্লাসে ছিল এক দুষ্টু ছেলে। তার নাম মনির হোসেন মিন্টু। সে সব সময় স্যারদের ক্লাসে পড়া জিজ্ঞাসা করলে উল্টাপাল্টা জবাব দিত। অবশ্য তার জবাবে যুক্তি থাকে। একদিন ক্লাসে বিজ্ঞান স্যার আমাদেরকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সর্ম্পকে বোঝাচ্ছিলেন। তিনি অনেকবার বুঝানোর পর স্যার একে একে সবাইকে বললেন, আম পাকলে আকাশের দিকে না উঠে মাটিতে পড়ে কেন?

শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬

নতুন জীবন


কলেজে ভর্তি হবার পূর্বে কলেজকে নিয়ে রবিন কতনা রঙিন স্বপ্ন দেখেছে। যেখানে আছে স্বাধীনতা। নেই কোন শাসন। ইচ্ছে হলে ক্লাশ করবে, ইচ্ছে না হলে ক্লাশ করবে না। কোন শিক্ষক কিছু বলবে না। এই হল কলেজের নিয়ম। আর পড়ার জন্য স্যারের পিটুনি খেতে হবে না। সেই সঙ্গে পারিবারিক দিক দিয়েও সে এখন স্বাধীন। কারণ সে এখন বড় হয়েছে। ভাল মন্দ বুঝার বয়স হয়েছে। স্কুল পাশ করে কলেজে এসেছে। কাজেই ছেলেকে আর পূর্বের মত তার পিতা-মাতা শাসন করতে পারবে না। বন্দী পাখী খাচা থেকে মুক্তি পেলে যেমন মহানন্দে আকাশে বিচরণ করে, ঠিক তেমননি রবিন কলেজে ভর্তি হবার পর অনাবিল আনন্দে স্বাধীনতা ভোগ করছে। এ যেন এক নব জীবন।

সাকিবের ঈদ


কেন যেন আজ সাকিরে মনটা ভাল লাগছে না। এশার নামায আদায় করে ঘরে এসে বসলো। ইচ্ছে হলো দেয়ালে ঝুলানো ক্যালেন্ডারটির প্রতি চোখ বুলাতে। আর মাত্র পনের দিন বাকী ঈদের। অনেকদিন যাবত বাবাকে কোন চিঠি লেখা হয়নি। তাই মনে মনে ভাবছে সে, ঈদ তো প্রায় নিকটবর্তী। এবারের ঈদে বাড়িতে যেতে হবে। কাজেই বাবাকে একখানা চিঠি লেখার প্রয়োজন। কলম ও প্যাড নিয়ে বসে পড়লো সে। চিঠি লিখতে লিথতে রাত ১০টা বেজে গেছে তার কোন খেয়াল নেই। কাজেই আর দেড়ী করা যাচ্ছে না, এখনি শুয়ে পড়তে হবে। কারণ ভোর রাতে উঠে পড়তে হবে। সামনে তার দাখিল পরীক্ষা। সে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করছে। ঈদের পর পরই তার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে। পরদিন সকাল বেলা তাড়াতাড়ি চিঠিটা পোস্ট করে দিল।
দিন যায় রাত আসে এভাবে কেটে গেল ১০দিন।

না বলা কথা


নোমানের বুকের ভেতরে নিদারুণ কষ্ট অনুভূত করতে লাগলো। এইতো কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে সে এমন হয়ে গেল। অথচ এখন থেকে ছয় সাত ঘন্টা পূর্বেতো সে এমন ছিল না। তখন তার মন ছিল ফুর ফুরে, উৎফুল্ল। কিন্তু কেন? কি হয়েছে ওর? কিসের জন্য জন্য এত কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে শুয়ে আছে। হ্যাঁ সে ক্ষণিকের জন্য একটি চাঁদ হাতের কাছে পেয়েছিল, কিন্তু তা আবার হারিয়ে গেল। তাইতো তার বুকে এত কষ্ট চাপা দিয়ে আছে। বয়ে গেল তার জীবনে এক কাল বৈশাখী ঝড়। সে ঝড়ে তার হৃদয়টাকে ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেল।

শুক্রবার, ১৮ মার্চ, ২০১৬

স্মৃতিগুলো মনে পড়ে

স্কুল জীবন শেষ করে আজ কলেজে পা রাখলাম। যাদের সাথে দশটি বছর লেখাপড়া করলাম, তাদেরকে ছেড়ে আসতে খুবই কষ্ট হয়েছে। তবুও আসলাম। তারা কতইনা আপন ছিল আমার। কত জায়গায় ঘুরেছি তাদের সাথে। স্কুলের বন্ধুদের মধ্যে কাশেম, নজরুল, আরাফাত ও জয়নাল খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল আমার। ক্লাশে একটু ফাঁক পেলেই আড্ডায় মেতে থাকতাম আমরা।

বন্ধু

মোহতেশাম ছোট্ট শিশু। বয়স আট কি নয়। সে তার বাবা-মায়ের সাথে ঢাকায় থাকে। এবার সে তার দাদার বাড়িতে এসে ঈদ করবে। সামনে কোরবানির ঈদ। তাই এ উপলক্ষে সে ঈদের দু’দিন পূর্বেই গ্রামের বাড়িতে চলে আসল। মেঘনার তীর ঘেষে তার দাদার গ্রামের বাড়ি।
মোহতেশামের গ্রাম দেখতে খুব ভাল লাগে। মাঝে মাঝে স্কুল বন্ধ হলে যে চলে আসে দাদার কাছে। তখন আর যেতে ইচ্ছে করে না তার। শহরের মত যানজট নেই এখানে। মুক্ত আবহাওয়ায় ছুটাছুটি করতে পারে। নেই কোন বাঁধা। নদীতে সাঁতার কেটে গোসল করতে পারে। আরও কত্ত কি! তাইতো তার গ্রাম এত ভালো লাগে।

সেমুলী


আমি তখন ছোট। বয়স ছয় কি সাত হবে। মাঝে মাঝে স্কুলে যেতাম এবং দিনে একটা করে বই ছিঁড়তাম। আমি ছিলাম নিন্মবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমার জন্মের পর থেকেই বাবার সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়। অথচ আমার জন্মের পূর্বে আমাদের সংসারে ছিল ঘোলাভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু ও বালতি ভরা দুধ। দাদা যখন সংসার ছেড়ে দিলেন, তখন থেকেই আমাদের সংসারে অবনতি ঘটতে থাকে। এখন বাবা একদম নিঃস্ব হয়ে

ভালোবাসা


আশিক গ্রামে লজিং থেকে লেখাপড়া করে। সে এ বছর এস.এস.সি পরীক্ষার্থী। ছাত্র হিসেবে খুব ভাল। আর মাত্র দু’মাস বাকী ওর ফাইনাল পরীক্ষার। লেখা পড়া নিয়ে এখন খুবই ব্যস্ত। বন্ধুদের সাথে বসে গল্প করার সময়ও এখন আর তার নেই। 
আশিকের লজিং মালিক মুক্তার সাহেবের বড় মেয়ে প্রিয়ার সাথে তার ভালোবাসা বিনিময় হয়। 
আশিক প্রিয়ার ছোট একভাই ও বোনকে পড়াতো। প্রিয়াকে তার পড়াতে হতো না। সে ক্লাস নাইনে পড়ে। প্রিয়া প্রতিদিন আশিকের কাছে আসত। তার কাছে এসে বসে থাকত। মাঝে মাঝে তার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে কি যেন দেখত।

সিয়াম সাধনা

দিন চলে যায়, রাত আসে এভাবে চলে যায় সপ্তাহ। পার হয়ে যায় মাস। দেখতে দেখতে চলে গেল এগারটি মাস। সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সেই পবিত্র মাহে রমযান এসে উপস্থিত হল আমার সামনে। সংকেত আসল আর মাত্র একদিন বাকী। মুহূর্তেই মনটা মোচর দিয়ে উঠল।
রমযান উপলক্ষে কলেজ একমাস পনের দিন বন্ধ। ভাবছি এ বছর বাড়িতে গিয়ে রোযার মাসটা কাটাব। তাই কালবিলম্ব না করে আজই কাপড়-ছোপড় গুছিয়ে রওয়ানা হলাম। ঢাকা থেকে বাসে নরসিংদী আসলাম। বাম হাতে বাঁধা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ২:২৫ মিনিট।
হায়! এখন কি হবে, লঞ্চতো ২:৩০ মিনিটে ছেড়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৬

মা


আমার নানার চার মেয়ে ও দু’ছেলের মধ্যে আমার মা ছিলেন সবার বড়। নানা আমার মাকে খুব ভালোবাসতেন। আমাদের বাড়ি থেকে নানার বাড়ি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে। গ্রামের নাম চরবাড্ডা মির্জাচর। সবুজ গাছপালা বেষ্টিত গ্রামটি খুবই চমকার। মাঝে মাঝে আমার মাকে দেখার জন্য নানা আমাদের বাড়িতে আসতেন। আসার সময় নানা মায়ের জন্য কাঁঠাল, আম, কলা, আনারস, বেদানা, আঙুর আরো কত কি যে নিয়ে আসতেন তার কোন হিসেব নেই। নানা যখন চলে যেতেন, তখন মা প্রায়ই কাঁদতেন আর আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতেন। তখন প্রিয় বাবা চলে যাওয়ায় নিজের মধ্যে শূন্যতা অনুভব করতেন।

পুরস্কার

সুবর্ণা ও সজিব ওরা দু’ভাইবোন। সুবর্ণা বড় নবম শ্রেণিতে পড়ে। সজিব ছোট ষষ্ট শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকদিন যাবত দু’জনেই পড়ালেখা নিয়ে খুবই ব্যস্ত। কারণ সামনে একটি প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতে হবে ওদেরকে। প্রতিযোগিতায় দু’জনেরই নাম দেয়া হয়েছে। সুবর্ণা প্রতিযোগিতায় উপস্থিত বক্তৃতা দিবে আর সজিব কবিতা আবৃতি করবে। সজিব সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘লিচু চোর’ কবিতাটি আবৃতি করবে। তাই সজিব বাড়িতে প্রতিদিন ‘লিচু চোর’ কবিতাটি চর্চা করছে। সুবর্ণার জানা নেই ওর ভাগ্যে কোন বিষয় পড়ে। তাই ও অনেক গুলো বিষয় নিয়ে নিয়মিত চর্চা করছে।